নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় ১৬৫ জন লালন অনুসারীকে ‘মুরতাদ’ আখ্যায়িত করে লিফলেট বিলি করা হয়েছে।
‘হেফাজতে ঈমান’ নামে একটি সংগঠন ওই লিফলেট বিলি করার পর আতঙ্কে রয়েছেন উপজেলার লালন অনুসারীরা।
মঙ্গলবার বিকালে কেন্দুয়া উপজেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাউল ভক্তদের সংগঠন তরিকতে আহলে বাইত বাংলাদেশের কেন্দুয়া উপজেলা শাখা সংবাদ সম্মেলন করে এ আতঙ্কের কথা জানায়।
সংগঠনের উপজেলা শাখার সভাপতি আব্দুল লতিফ আকন্দ বলেন, গত ৩০ নভেম্বর উপজেলার চিথোলিয়া গ্রামের আব্দুল হালিমের বাড়িতে লালন শাহ স্মরণে গানের আসর বসার কথা ছিল। কিন্তু একটি মহলের বাধায় সেদিন তারা অনুষ্ঠান করতে পারেনি।
“এরপর নানা অভিযোগ এনে উপজেলার লালন অনুসারীদের মুরতাদ ঘোষণা করে ঈমান হেফাজতের নামে এলাকায় লিফলেট ছড়ানো হয়েছে। ১৬৫ জনের তালিকা করে তাদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে।”
উপজেলার চিরাংবাজারে লালন অনুসারী নূর আলমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১৩ দিন ধরে বন্ধ রাখতে বাধ্য করাসহ তালিকায় নাম আসা সবাইকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ওই লিফলেটে লালন অনুসারীদের ‘কাফের ও মুরতাদ’ আখ্যায়িত করে তাদের ‘জমিন থেকে উৎখাতের’ জন্য ‘তৌহিদী জনতার’ প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হাফেজ দেলোয়ার হোসেন চিশতীও এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
ওই লিফলেটের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কেন্দুয়া থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “লালন অনুসারীরা বিষয়টি আগে জানায়নি। আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় তারা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।”
হেফাজতে ঈমানের নামে ছড়ানো ওই লিফলেট পেয়েছেন জানিয়ে ওসি বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দেশের বিভিন্ন স্থানে এর আগেও বাউল ও লালনভক্তদের ওপর জঙ্গি ও উগ্রপন্থিদের হামলা ও হুমকির ঘটনা ঘটেছে।
গতবছরের ডিসেম্বরে চুয়াডাঙ্গায় বাউল উৎসবের এক আয়োজককে হত্যা করে জঙ্গিরা। আর চলতি বছর জুলাই মাসে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে এক বাউল আস্তানায় হামলা চালিয়ে তিন ভক্তকে পিটিয়ে জখম করা হয়।